সিলেটের জৈন্তাপুরের গোয়াবাড়ী পান-সুপারী বাগান পর্যটন প্রেমীদের অন্যতম স্থান হতে পারে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং খাসিয়াদের পান সুপারী জুম, উচু-নিচু পাহাড়টিলা, সমতল ভূমির সৌন্দর্য্য সব মিলিয়ে এক নৌসর্গিক স্থান হিসাবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত।
জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ১২৯২-১২৯৩ আন্তর্জাতিক পিলার সংলগ্ন ভিতরগোল গ্রামে খাসিয়া আধিাবাসি পরিবার সদস্যরা সরকারের নিকট হতে ৬৫ একর ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে ২৫বৎসর যাবত নিবিড় পরিচর্ষার মাধ্যমে পান-সুপারী বাগান সৃজন করেছেন। অনুক খাসিয়া, ফয়ছল খংলা এবং অবসর প্রাপ্ত প্রবীন শিক্ষক প্রদীপ নাইয়াং এর সাথে আলাপকালে তারা জানান, আমরা শান্তি প্রিয় জনসাধারণ কারও সাথে ঝগড়া বিবাদ বা ফ্যাসাদ করতে রাজী নই। সরকারের নিকট হতে পতিত পাহাড়ী টিলা রকমের ৬৫ একর ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে ২৫ বৎসর নিবিড় পরিচর্ষার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাগানটি সৃজন করেছি। বর্তমানে বাগানের সৌন্দর্য্য প্রকৃতি প্রেমিদের নজর কাড়ছে। স্থানীয় প্রকৃতি প্রেমীরা আমাদের বাগানে ঘুরতে আসেন। বাগানের সৌন্দর্য্য তারা মুগ্ধ হন। এটাই আমাদের আনন্দ লাগে। আমরাও ঘুরতে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের ভালবাসী। পরিকল্পিত ভাবে পান-সুপারী বাগানটি করায় ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আর্কষণ বেড়েই চলছে।

গোয়াবাড়ী সুপারী বাগনে প্রকৃতির নানাবিদ সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে পুরোএরিয়া জুড়ে। হাজার হাজার সুপারী গাছ এমন ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেখলে প্রাণ জুড়াবে যেকারও। সেই সাথে উচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে যেদিকে থাকাবেন দেখা মিলবে বাংলার অপরূপ প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য। পাহাড়ের বসে প্রাণ জুড়াবেন মিট মিট হাওয়ায়। নিরবে শুনবেন পাখিদের কিছির মিছির শব্দ। প্রকৃতিক লেক পায়ে হেঁটে ঘুরতে বেশ আনন্দ লাগে। যান্ত্রিক কোলাহল মুক্ত প্রাকৃতিক এমন পরিবেশ পাওয়া দূষ্কর। প্রকৃতির পাশা-পাশি পরিকল্পিত বাগানটি পর্যটকের জন্য রোমাঞ্চকর।
ফটোজার্নালিষ্ট আনিস মাহমুদ বলেন, আমার দেখা জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যমত পর্যটন স্থান হবে গোয়াবাড়ী ভিতরগোল গ্রামের আধিবাসী সম্প্রদায়ের পান-সুপারী বাগান। ঋতু বেঁধে বাগানের সৌন্দর্য্য নানা ভাবে পরিবর্তন হয়, যাহা সিলেটের অন্যকোন স্থানে দেখা মিলে না। সারা বৎসরের স্থানটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য উপযোগী। সিলেটে যারা ঘুরতে আসেন তারা অন্তত গোয়াবাড়ী ঘুরে যেতে পারেন।
এইচ এম শহিদুল ইসলাম বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা প্রকৃতিগত ভাবে এডভেঞ্চারপূর্ণ এলাকা। গোয়াবাড়ীতে ঘুরতে আসলে ভ্রমণ পিপাসুরা কোথাও যেতে চাইবে না। সবুজ প্রকৃতি, সারি সারি সুপারী গাছ, পাহাড় টিলা, লেক দেখতে দেখতে অনায়সে দিন পার করতে পারবে।
সহকারি অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, পান-পানি-নারী এই তিনে জৈন্তাপুরি। জৈন্তাপুরের প্রকৃতি দেখার মত। গোয়াবাড়ী সাধারণত প্রকৃতি প্রেমীদের নিকট সেরকম ভাবে উপস্থাপন হয়নি। এই স্থানটি সারা বৎসর প্রকৃতি সৌন্দর্য্য পাওয়া যাবে। যাহা অন্য কোন স্থানে এমনচিত্র পাওয়া যাবে না। আমি মনে করি পর্যটক বা ভ্রমণ পিপসুরা এই স্থানটি ঘুরে যেতে পারেন।
যেভাবে যাবেন গোয়াবাড়ী পান-সুপারী বাগানে: সিলেট নগরীর সোবহানীঘাট থেকে জাফলংগামী বাসে করে আসা যাবে জৈন্তাপুর বাজারে। সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত টমটম বা সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে সরাসরি যাওয়া যাবে। সিলেট শহর হতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বাসের ভাড়া জন প্রতি ১০০টাকা আর টমটম বা সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া জৈন্তাপুর বাজার থেকে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে। এছাড়া সিলেট নগরী থেকে সরাসরি বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা অথবা লেগুনা রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে সুপারী বাগানে।